তোকমাদানা (বসিল সিড) এবং চিয়া সিড দুটোই অত্যন্ত পুষ্টিকর বীজ, যেগুলি স্বাস্থ্য-conscious মানুষদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। যদিও চিয়া সিড বেশি পরিচিত এবং জনপ্রিয়, তবে তোকমা ও একইভাবে নানা স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে এবং দামেও কিছুটা সাশ্রয়ী। সুতরাং, প্রশ্ন উঠতেই পারে—তোকমাদানা কি চিয়া সিডের চেয়ে উপকারী?
১. ফাইবার ও প্রোটিন: তোকমাদানা এবং চিয়া সিড উভয়ই উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ, তবে তোকমায় ফাইবারের পরিমাণ বেশি। ১ টেবিল চামচ তোকমায় ৭ গ্রাম ফাইবার থাকে, যা হজমকে সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। চিয়া সিডের তুলনায় তোকমা দ্রুত হজম হয়, তাই যারা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য তোকমা উপকারী হতে পারে। তোকমায় প্রোটিনের পরিমাণও চিয়া সিডের চেয়ে বেশি, যা শরীরের মাংসপেশী গঠনে সহায়ক।
২. অ্যামেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে অ্যামেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক এবং ত্বক, চুলের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে তোকমায় এই ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ কম, তাই চিয়া সিডের তুলনায় হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত উপকারিতায় চিয়া সিড এগিয়ে।
১. হজম সহায়তা: তোকমাদানা জল শোষণ করে ফুলে যায়, যা পাকস্থলী ও অন্ত্রের সমস্যায় সাহায্য করতে পারে। এটি অ্যাসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পাচনতন্ত্রের অন্যান্য সমস্যার পথ্য হিসেবে খাওয়া যেতে পারে। চিয়া সিডের তুলনায় তোকমা দ্রুত হজম হয়ে শরীরের পুষ্টি শোষণে সহায়ক।
২. ওজন কমানো: তোকমা পানির সঙ্গে মিশে পেট ভরিয়ে রাখে, ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছা কমায় এবং এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। চিয়া সিডও এই ক্ষেত্রে কার্যকর, তবে তোকমা অধিক হারে পানি শোষণ করার কারণে, এটি আরও দ্রুত কাজ করতে পারে।
৩. প্রদাহবিরোধী: তোকমায় প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা শরীরে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি শারীরিক ব্যথা বা প্রদাহজনিত রোগগুলোর চিকিৎসায় সহায়ক হতে পারে।
৪. হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের প্রতিরোধ: তোকমা হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিস ও স্থূলতার ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। যদিও চিয়া সিডও এই কাজে কার্যকর, তোকমা কিছুটা বেশি দ্রুত ফলপ্রসূ হতে পারে।
চিয়া সিডের মতোই তোকমাদানাও পানি ভিজিয়ে রাখতে হয়। তবে তোকমা দ্রুত ফুলে যায়, এবং ১০-১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখলেই এটি খাওয়ার জন্য প্রস্তুত। আপনি এটি দুধ, স্মুদি বা সালাদে মিশিয়ে খেতে পারেন।
উপকারিতায়, চিয়া সিড এবং তোকমা উভয়ই সমানভাবে স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। তবে যদি আপনার লক্ষ্য হয় দ্রুত হজম, কোষ্ঠকাঠিন্য কমানো, বা অতিরিক্ত খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করা, তবে তোকমা চিয়া সিডের তুলনায় আরও কার্যকরী হতে পারে। তোকমার দামও চিয়া সিডের তুলনায় কম, তাই এটি একটি সাশ্রয়ী বিকল্প। তবে সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য, দুটি বীজই একসাথে খাওয়া যেতে পারে।