ঢাকা: রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সংঘটিত মারামারির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন, এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে এবং প্রকৃত কারণ উদঘাটন করতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে হঠাৎ করেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ঘটনাটি শুরু হয় কথাকাটাকাটির জেরে, যা পরে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় রূপ নেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, মারামারির সঙ্গে ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী জড়িত ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে, ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে, যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
ঘটনার পরপরই ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এক জরুরি বৈঠক করেন। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মিজানুর রহমানকে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন যুগ্ম সম্পাদক কামরুল হাসান ও সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ছাত্রদলের এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, এ ঘটনায় আমাদের কর্মীদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রকৃত সত্য উদঘাটন করতেই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, যদি তদন্তে ছাত্রদলের কেউ জড়িত থাকে, তাহলে সাংগঠনিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ক্যাম্পাসের বাইরের ঘটনায় তাদের কোনো ভূমিকা নেই। তবে, কোনো শিক্ষার্থী এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, “আমরা সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করছি এবং পুলিশকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছি।”
গুলশান থানার ওসি জানান, এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি, তবে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সংঘটিত এই মারামারির ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অনেকেই চাইছেন, দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। ছাত্রদলের তদন্ত কমিটি কতটা কার্যকরভাবে এই ঘটনার আসল রহস্য উন্মোচন করতে পারে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।